কবিতা: আমি হেঁটেছি
কবি: শিপন আহমেদ হিমেল
আবৃত্তি: জালালুদ্দিন রুমি
মিউজিক: মাতাল বাঁশি
বই: বিরহী কাব্য
প্রকাশিত: অমর একুশে গ্রন্থমমেলা (২০২০)
কবিতার কথামালা:
আমি হেঁটেছি
আমি হেঁটেছি
অনেক হেঁটেছি।
জন্ম জন্মান্তর থেকে হেঁটেই চলেছি
আমি এখনো হাঁটছি
শিশু কালে পা পিছলে বারবার পড়ে গিয়েছি
তবুও আমি হেঁটেছি।
আমি শৈশবে অনেক হেঁটেছি।
বন্ধু বান্ধবের সঙ্গ ত্যাগ করে
দূরে সরে গিয়েছি।
কোন মায়া-মমতা
আমাকে জড়াতে পারেনি!
আমি দূর থেকে মায়া-মমতা
দেখেছি আর হেঁটেছি
আমি এখনো হাঁটছি..
জীবনের ভরা যৌবনে অনেক হেঁটেছি।
কারো ভালোবাসা আমায় স্পর্শ করেনি!
অনেকে আমায় ডেকেছে
বার বার ডেকেছে,
তবুও আমি দাঁড়াইনি।
আমি হেঁটে চলেই যাচ্ছি
আমি আমার মতো করে হেঁটেছি।
কোন তরূণীর ভালোবাসা
আমার পথ আটকাতে পারেনি।
আমি হেঁটেই চলেছি
অতীতগুলো আমায় বারবার পিছু ডেকেছে,
আমি পিছু তাকাইনি।
আমি নতুন করে সামনে এগিয়েছি।
মাঝে মাঝে নিস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছি।
তারপরও আমি হেঁটেছি
আমি অনেক হেঁটেছি।
কখনো দুঃখে হেঁটেছি
কখনো সুখে হেঁটেছি।
কখনে ক্লান্তিতে হেঁটেছি
কখনো শান্তিতে হেঁটেছি।
কখনো রোগে, কখনো শোকে হেঁটেছি।
কখনো প্রবল বেগে হেঁটেছি
কখনো নিঃশব্দে হেঁটেছি।
আমি হেঁটেছি, অনেক হেঁটেছি।
জন্ম জন্মান্তর থেকে হেঁটেই চলেছি।
শিশির ঝরা ভোরের প্রথম প্রভাতে আমি হেঁটেছি।
গৃষ্মের প্রখর রৌদ্রে,
মধ্য দুপুরে আমি হেঁটেছি।
রাতের নির্জনেও আমি অনেক হেঁটেছি।
আমি চাঁদের আলোয় হেঁটেছি ,
নদীর ধারে, নদীর জলেও হেঁটেছি।
অমাবস্যার কুটকুটে অন্ধকারেও হেঁটেছি।
শরতের নীল আকাশের নিচে
আমি অনেক হেঁটেছি।
আষাঢ়ের প্রবল বৃষ্টিটে ভিজেছি আর হেঁটেছি।
আমি কাল বৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়েছি
সেই দিনও আমি হেঁটেছি।
আমি বাংলার মাঠে ঘাটে অনেক হেঁটেছি।
আমি দারিদ্র মানুষের দারিদ্রতা দেখেছি
আমি দুঃখী মানুষের দুঃখ, দুর্দশা দেখেছি
আর নিরবে, নিশ্চলে হেঁটেছি।
আমি মৃত্যু পথও যাত্রীর আর্তনাদ দেখেছি!
সেই দিনও আমি হেঁটেছি।
আমার মতো এমন করে
কে আর হাঁটিতে পারিবে?
শিশু কৈশোর থেকে ভরা যৌবনে।
হেসে আনন্দে, প্রফুল্লে
দুঃখ, কষ্ট, বিরহে;
দেশ থেকে দেশান্তরে।
আমি আমার মতো করে এখনো হাঁটিতেছি
জন্ম জন্মান্তর থেকে হেঁটেই চলেছি..
আজ অজানা গন্তব্যে পা বাড়িয়েছি।